লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই চড়তে আরম্ভ করেছিল মাটনের বাজার। জোগানের অভাবে অধিকাংশ দোকান বন্ধই পড়ে আছে মাস দুয়েক। গ্রামের হাট থেকে কিছু পশু কিনে টিমটিম করে চালু ছিল কিছু দোকান -- আমফানের পর রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে পথও কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই শহর কলকাতায় খাসির মাংসের দর পেরিয়ে গিয়েছে 800 টাকার মাত্রা। আমফানের পর প্রবল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মুরগি আর ডিমের বাজারও, লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে।
দক্ষিণবঙ্গের যে সব জেলা থেকে কলকাতার বাজারে পোলট্রির মুরগি আর ডিমের জোগান আসে, সেগুলি ঝড়ের প্রকোপে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেল যোগাযোগ বন্ধ হওয়া থেকেই অন্ধ্রের মাছ আসছে না বঙ্গে -- মাছের বাজার চালুই ছিল স্থানীয় জেলাগুলির উৎপাদনের ভরসায়। আপাতত উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনার যা অবস্থা, তাতে মাছের জোগানেও টান পড়তে বাধ্য। সেই সঙ্গে আকাশ ছুঁয়েছে ফল-সবজির দামও। কারণ ঝড়-জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সব ফসল, জোগান নেই। অন্তত মাস দেড়েক এমন চলার পর হয়তো পরিস্থিতি শুধরোবে। কিন্তু ততদিন সবার পাতে পুষ্টিকর খাবার তুলে দেবেন কীভাবে?
কেপিসি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ রঞ্জিনী দত্ত বলছেন, “অত চিন্তা করার কিছু নেই, বাঙালির পাতে যে ডাল-ভাত বরাবর থেকেছে, তাতে কোনও টান ধরেনি এখনও। ডাল আর ভাত আপনার প্রোটিন আর কার্বোহাইড্রেটের জোগান মেটাবে। সঙ্গে যে সবজি পাবেন, তাই খান।" ডালের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। দুধ থেকে ছানা কাটিয়ে নিন, তা দিয়ে রেঁধে ফেলুন ছানার ডালনা। সোয়াবিন দানা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে বেটে নিন মিক্সিতে। তার পর সেটা মিহি ছাঁকনিতে ছেঁকে নিলেই পাবেন সোয়া মিল্ক। এই সোয়া মিল্ক জ্বাল দিতে বসান। ফুটে উঠলে লেবুর রস মেশান। ছানা কেটে যাবে। ভালো করে এই ছানা থেকে জল ঝরালেই মিলবে টোফু। যাঁরা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট, বা লো ফ্যাট খাবার খান, তাঁরাও স্বচ্ছন্দে খেতে পারেন। টোফু দিয়ে ছানার ডালনার মতো করেই তরকারি রেঁধে নিন। দই থেকেও কিন্তু প্রোটিন আর ক্যালশিয়াম দুটোই মেলে।
ওটস, কিনওয়ার মতো দানাশস্যেও কিছু মাত্রায় প্রোটিন থাকে। তা মিলবে বাদাম, কুমড়ো বীজ, ফ্ল্যাক্স সিড থেকেও। আর সকালে উঠে একটু অঙ্কুরিত ছোলা-মুগ খেতে পারেন। তাতেও বজায় থাকবে প্রোটিনের মাত্রা।
বাজারে মাছ-মাংস অমিল, খাদ্যতালিকায় রাখুন প্রোটিনের অন্য উৎসগুলি
লিখছেন রুদ্রাণী ভট্টাচার্য | May 27, 2020, 12:00 AM IST


মন্তব্য