আজ মাস দুয়েকের বেশি সময় ধরে বাড়িতে বসেই কাজ করতে হচ্ছে সারা দুনিয়ায় বহু কর্মীকে। গোড়ায় মনে হয়েছিল, পরিবারের সঙ্গে থাকা এবং অফিসের কাজ -- দুটো একসঙ্গে সামাল দেওয়াটা খুব সহজ হবে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে যে, অফিসের কাজ সারতে গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত জীবন বলে আর কিছু থাকছে না। যে কাজ অফিসে সারতে সময় লাগত দু’ ঘণ্টা, বাড়িতে সেটা করতে পেরিয়ে যাচ্ছে ঘণ্টা তিন-চার। হ্যাঁ, আপনার অফিসের ইন্টারনেট যত তাড়াতাড়ি কাজ করে, বাড়ির ওয়াই-ফাই বা ব্রডব্যান্ডের সে শক্তি নেই। আমফানের পর পরিষেবা আরও খারাপ হয়েছে -- কিন্তু তা সাময়িক। কিছুদিনের মধ্যেই অবস্থা ভালো হবে। তার জন্য সাময়িকভাবে কয়েকদিন দেরি হতে পারে, রোজ রাত ন'টা পর্যন্ত কাজ করার কথা নয়।
বাড়ির কাজ আর অফিসের কাজ একসঙ্গে করছেন কী?
অফিসের টাইমিং মেনটেন করার চেষ্টা করুন। দশটা থেকে ছ’টার মধ্যে সব কাজ সেরে ফেলার রুটিন বানাতে হবে আপনাকেই। অনেক সময়ে বাকি সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বা মিটিং করতে গিয়েও অনেকটা সময় চলে যাচ্ছে। সেটাকেও কাজের অঙ্গ বলেই ধরে নিতে হবে। অফিস টাইমের মধ্যে রান্না বা ঘরের কাজ করা যাবে না, সেটা হয় আগে সেরে নিন, না হলে পরে করবেন। লাঞ্চ ব্রেকে একটু অবসর নিতে পারেন, তাতে কিন্তু প্রোডাক্টিভিটি কমে না।
সব পেশায় নিজের সুবিধেমতো সময়ে কাজ করা যায় না
অনেকের ধারণা, ওয়ার্ক ফ্রম হোম মানে নিজের ইচ্ছেমতো সময়ে কাজ করার স্বাধীনতা। কিছু কিছু পেশার ক্ষেত্রে তা হয়তো সম্ভব। বা ভোরবেলা উঠে আপনি কোনও জরুরি প্রজেক্ট, রিপোর্ট বা প্রপোজাল তৈরি করে রাখতে পারেন। কিন্তু অফিস টাইমের বাইরে, নিজের ইচ্ছেমতো সময়ে রোজ কাজ করতে গেলে দেখবেন আখেরে আপনারই ক্ষতি হচ্ছে। অন্য সহকর্মীদের কাজের সময়ে অজস্র ফোন ধরতে হবে, মেলের উত্তর দেওয়ার জন্য বসতে হবে ল্যাপটপে -- তার চেয়ে সেই নিয়মই মানুন যা করলে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ করতে পারেন।
আপনার কাজের দেরির জন্য বাড়ির লোককে দায়ী করবেন না
সমস্যা হচ্ছে আপনার প্ল্যানিংয়ে, কাজে দেরির জন্য বাড়ির কেউ দায়ী নয় -- এটা বুঝে নিন। তার চেয়েও জরুরি বিষয় হচ্ছে, এখন আরও বেশ কিছুদিন আমাদের এভাবেই কাজ করতে হবে। চলবে সন্তানের স্কুলও। তার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন এবং নিজের কোথায় ভুল হচ্ছে তা খতিয়ে দেখুন। মনে রাখবেন, চাকরির বাজার এমনিতেই বেশ খারাপ। তার মধ্যে প্রোডাক্টিভিটি নিয়ে যেন সমস্যা তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করার দায় আপনারই। অনেক অফিস ল্যাপটপে ট্র্যাকার লাগাচ্ছে – তাতেও নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই। নিয়ম মেনে কাজ করলে খামোকা বিপদে পড়ার আশঙ্কাই থাকে না।
অতিরিক্ত স্ট্রেস নেবেন না
বাড়তি মানসিক চাপ নিয়ে কাজ করতে পারবেন না, পদে পদে ঠোক্কর খেতে হবে। নতুন একটা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে, অনেকে অফিসের মতো সেট আপে ভালো কাজ করেন। হয়তো আর কিছুদিন সময় পেলে আপনিও তাড়াতাড়ি কাজ সেরে ফেলবেন। তা যতক্ষণ না হচ্ছে, ততক্ষণ ওয়ার্কিং আওয়ারের মধ্যে বেশি ব্রেক নেবেন না। দরকারে প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুন, তার মধ্যে কাজ সারুন।
বাড়িতে বসে কাজ করতে গিয়ে সময় বেশি লাগছে? শিখে নিন টাইম ম্যানেজমেন্ট
লিখছেন রুদ্রাণী ভট্টাচার্য | May 26, 2020, 12:00 AM IST


মন্তব্য